নাটক থেকে শিশু ও বয়স্কদের চরিত্র বাদ
করোনায় সরকারি বিধিনিষেধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শুটিংয়ে ফিরতে যাচ্ছে টেলিভিশনের ১৫টি সংগঠন। সংগঠনগুলোর সমন্বয়ক প্ল্যাটফর্ম এফটিপিও’র সভাপতি নাট্যজন মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
এতে বলা হয়, ১ জুন থেকে শুটিং শুরু করা যাবে। তবে পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী ও নাট্যকারদের কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যারমধ্যে অন্যতম শর্ত, ঘনিষ্ঠ দৃশ্য কোনোভাবেই গল্পে রাখা যাবে না! তবে এই ‘ঘনিষ্ঠ দৃশ্য’ কতোটা বা কেমন ‘ঘনিষ্ঠ’, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্টদের কাছে।
শর্তগুলো হচ্ছে-
১. করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ অবস্থা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আন্তঃসংগঠন ও শুটিং করার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করছেন। তবে যাদের কাজ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে, তারা সাময়িকভাবে জীবন-জীবিকা চলমান রাখার স্বার্থে আন্তঃসংগঠনের দেওয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে যদি কেউ শুটিং কার্যক্রমে নিজ দায়িত্বে অংশ নিতে চান, তাহলে তিনি তা করতে পারবেন।
২. সংশ্লিষ্ট ইউনিট শুটিং শুরু করার আগেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শুটিং কার্যক্রম শুরু করবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট শুটিং ইউনিটকে তার সম্পূর্ণ দায় বহন করতে হবে।
৩. প্রতিটি শুটিং ইউনিটের শিল্পী-কলাকুশলী প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবেন। সমস্যা দেখা দিলে প্রযোজনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সহায়তা নিয়ে তারা তা নিজ উদ্যোগে সমাধান করবেন।
৪. এই ঘোষণা সরকারের ছুটি ও লকডাউন বিষয়ক ঘোষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিস্থিতি বিবেচনায় শুটিং কার্যক্রম যে কোনো সময় স্থগিত অথবা সম্পূর্ণভাবে বাতিল হতে পারে।
সংগঠন দুটির সাধারণ সম্পাদক এসএ হক অলিক ও আহসান হাবিব নাসিম জানান, সংক্রমণ এড়াতে জীবাণুনাশক ব্যবহার ও গাড়ি ব্যবহারের সাবধান হতে হবে। এছাড়া অভিনয়শিল্পীদের নিজ দায়িত্বে মেকআপ করে আসতে হবে। আর সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
তারা আরো বলেন, ‘সরকারের দেওয়া নির্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শুটিংয়ের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। উপরোক্ত নির্দেশাবলীর যেকোনও বিষয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের ঘোষণার সাথে সমন্বয় করে আন্তঃসংগঠনের নেতারা সংযোজন ও বিয়োজন করতে পারবে।’
বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ষাটোর্ধ্ব শিল্পী কলাকুশলীদের অংশগ্রহণ করালে তাদের বিষয়ে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। শিশু/কিশোর শিল্পীদের আপাতত কোনও নাটকে অংশগ্রহণ করানো যাবে না।
শুটিং আরম্ভ হওয়ার পূর্বে যদি সম্ভব হয়, কলাকুশলীবৃন্দ পিপিই পরিধান করে কাজে অংশগ্রহণ করবেন। বিশ্বের বহুদেশের নীতিতে এটা রাখা। এবং শুটিং শুরুর আগে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে সবার।
উল্লেখ্য ২২ মার্চ থেকে দেশের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় টিভি নাটকের শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় টিভি নাটকের আন্তঃসংগঠনগুলো। এরমধ্যে একবার শুটিংয়ে ফেরার ঘোষণা দিয়েও নানা সমালোচনার চাপে সেটি কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাতিল করা হয়। তবে এবারের সিদ্ধান্ত আপাতত বাতিল হওয়ার কারণ নেই বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।